বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন দেশের দক্ষিণের জনপদ বরিশাল। বাংলাদেশের ৭টি প্রশাসনিক বিভাগের মধ্যে বরিশাল একটি। ৬টি জেলার সমন্বয়ে গঠিত এটি। ১,৪৭,৫৭০ বর্গ কিলোমিটারের বাংলাদেশে ১৩,২৫৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এর অবস্থান। নৌপথের প্রাধান্য, রেলপথের অনুপস্থিতি, গ্যাসলাইনের অনুপস্থিতি (ভোলা জেলাব্যতীত), অবকাঠামোর দুর্বলতা, কলকারখানার স্বল্পতা ইত্যাদি এই এলাকার কতিপয় বৈশিষ্ট্য। এইরূপ বৈশিষ্ট্য মন্ডিত বরিশাল বিভাগের আয়কর বিষয়ক যাবতীয় কার্যাবলী ব্যবস্থাপনার নিমিত্তে ২০০১ সালে কর অঞ্চল বরিশালের সৃষ্টি। আর এই সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে এর কর্ম পরিধি। ২০০০-২০০১ অর্থ বছরে কর অঞ্চল বরিশালে যেখানে করদাতার সংখ্যা ছিল ৩০ হাজার এবং আয়কর আদায়ের পরিমাণ ছিল ১৮ কোটি টাকা, সেখানে ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে করদাতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭২ হাজার এবং আয়কর আদায়ের লক্ষ্য মাত্রা ধার্য হয়েছে ১৮০ কোটি টাকা। তবে এতে আত্মতুষ্টির কোন অবকাশ নেই। দেশের ৯% এলাকা এবং ৫% জনসংখ্যা কর অঞ্চল বরিশালে অধিভূক্ত হলেও এর করদাতার সংখ্যা দেশের মোট করদাতার মাত্র ৩% এবং আয়কর আদায়ের পরিমাণ দেশের মোট আয় করের মাত্র ০.৩০%। তাই করদাতার সংখ্যা এবং আয়কর আদায়ের পরিমাণ একটি সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত করতে কর অঞ্চল বরিশালকে দ্রুত আরও অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। এক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া কোন বিকল্প নেই।
পদ্মাসেতু প্রকল্প, পায়রাবন্দর প্রকল্প, কুয়াকাটা পর্যটন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে অদূর ভবিষ্যতে বরিশাল অঞ্চলে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের এক মহাযজ্ঞ শুরু হতে চলেছে। এর অনুসঙ্গ হিসেবে বাড়তে চলেছে রাজস্ব আহরণের সম্ভাবনাও। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে কর অঞ্চল বরিশালকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে এবং বাড়তি সম্ভাবনার সাথে তাল মেলাতে নিজের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সক্ষমতা বাড়ানোর প্রস্তুতি হিসেবে গৃহীত একটি প্রয়াস হচ্ছে এই ওয়েবসাইট উন্নয়ন।
নিত্য নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার করে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশও উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রায় আয়কর বিভাগও সামিল রয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে আয়কর সংক্রান্ত তথ্য ও সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণে কর অঞ্চল বরিশালও নিরলস কাজ করে চলছে। বরিশাল কর অঞ্চলের ওয়েবসাইট উন্নয়ন এরই একটি নিদর্শন। আশা করি বরিশাল কর অঞ্চলের এ উদ্যোগ সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে এবং করদাতাসহ তথ্য সেবা প্রত্যাশী সকলপক্ষের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস